ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টা আসলে কিরকম মামলা ?

বিষয়টি বিব্রত কর হলেও নায়িকা পরীমনির মামলা আমাদের দেশের একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা, তাই এই মামলাটিকে বিশ্লেষন করতে আমাদের অপরাধ বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসা উচিৎ । প্লেস অব অকারেন্স,মোটিব, পরিপ্রেক্ষিত এবং ভিক্টিম এর পার্টিসিপেশন সহ বিভিন্ন থিউরি নিয়ে এই মামলাকে নিয়ে বিস্তর আলোচনার সুযোগ দেখা দিয়েছে। এবং এ বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

ধর্ষণ এর ঘটনায় বিশেষ শর্ত প্রযোজ্য তাহলো- সম্মতি। অসম্মতিতে যৌন মিলন ঘটলেই তাকে ধর্ষন বলা যায় এবং এক্ষেত্রে সহিংসতার ঘটনা নাও ঘটতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পাঠক জেনে নিবেন। ধর্ষন ছাড়াও নারীর উপর চরম সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। নোয়াখালির যে ঘটনার উপর কেন্দ্র করে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যু দন্ড করা হয়, সেটি কিন্তু ধর্ষন ছিল না, ছিল সহিংস নির্যাতন। নোয়াখালীর ঐ ঘটনা কে ধর্ষন এ ফেলতে ধর্ষনের সংঘাকে আপডেট করতে হবে। তো ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টা কেমন হতে পারে ? ধরেন কেও আপানাকে বেধে , অজ্ঞান করে, কিংবা অণ্য কোন উপায়ে জোর করে কেও আপনার সাথে যৌণ মিলন ঘটাতে চাইল, আজ পাশা খেলবোরে শ্যাম বলতে বলতে, কিংবা সুন্দরী তোমাকে এখন আমি ভোগ করবো হু হু হা হা বলতে বলতে সে আপনার দিকে এগিয়ে আসলো কিন্তু কোন এক নায়ক এসে ডিশুম ডিশুম করে আপনাকে বাচালো কিংবা কোন ভাবে আপনি বেচে গেলেন তাহলে বলা যায় নায়ক টি আপনাকে ধর্ষন এর হাত থেকে বাচালো কিংবা আপনি ধর্ষন এর হাত থেকে বেচে গেলেন।  আবার কেও আপনার দিকে ছুড়ি, পিস্তল কিংবা অণ্য কোন অস্ত্র যা দিয়ে আপনার মৃত্যু ঘটানো সম্ভব তা নিয়ে যদি তেড়ে আসে কিংবা বলতে থাকে আজ তোকে মেরেই ফেলব তাহলেও তাকে অ্যাটেমড টু মার্ডার বা হত্যা চেষ্টা বলা যায়। কেও আপানকে চড় মারলেই আপনি সেটাকে ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টা বলতে পারেন না।

বাংলাদেশের সুন্দরী নায়িকা বোট ক্লাবে গিয়ে ধর্ষণ এবং হত্যা চেষ্টার সম্মুখীন হবার পর থানায় মামলা না নিলে তিনি প্রধানমন্ত্রী বরাবর ফেইসবুকে আবেগ ঘন স্ট্যাটাটস দেন এবং সাংবাদিক সম্মেলন করেন। পরিমনির ক্রন্দন রত চেহারা দেখে সাংবাদিক সহ সবাই প্রথম দিকে পরিমনির পক্ষেই অবস্থান নেন কিন্তু ধীরে ধীরে বেশির ভাগ মানুষ পরিমনির পক্ষ থেকে দুরে সরে যায়। নারী কেলেংকারীর অনেক মামলাতেই উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং সত্যের সাথে মিথ্যার মিশ্রনের ফলে মামলা দুর্বল হয়ে যায় । অপরাধ বিশ্লেষনে পরিমনির মামলার ঘটনায় নানা রকম টুইস্ট পাওয়া যাচ্ছে।

পরিমনির মামলার ঘটনায় উল্লেখ যোগ্য দিক হলো

পরিমনি

১) সে বলেছিল পুলিশ মামলা নেয়নি, পুলিশ বলেছে মাতাল অবস্থায় কারো মামলা নেয়া হয় না, সে সময় পরিমনি মাতাল অবস্থায় ছিল।
২) আসামীদের প্রথমে মাদক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল পরবর্তীতে পরিমনির মামলায় রিমান্ড পায় পুলিশ।
৩) পরিমনির বাসায়ও অনেক মদের বতোল দেখা গেছে, পরিমনি বলেছে সে গুলো খালি বোতল ।
৪) বোট ক্লাব ছাড়াও পরিমনি আরো দুটি ক্লাবে ভাংচুর এবং অপ্রীতি কর ঘটনা ঘটিয়েছেন, একটি ঘটনায় তিনি নিজেই ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ ডাকলে পুলিশ উল্টো তার বিরুদ্ধে জিডি করেছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
৫) পরিমনির বিলাশ বহুল জীবন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। মামলার আসামীদের ‍রিমান্ড মন্জর করেছে আদালত ।

ঘটনা ক্রমে বিশ্রাম করার জন্য গভীর রাতে একটি ক্লাবে যাওয়ার পর কেউ একজন সুন্দরী নায়িকাকে তার সঙ্গীদের সামনে জোর করে মদ খাওয়াবে, হত্যা করতে চাইবে, ধর্ষন করতে চাইবে এই গল্পটি কম বিশ্বাস যোগ্য। বরং একজন বিলাশ বহুল জীবন যাপন কারী নায়িকা যার গভীর রাতে বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে মদ পান করা সাধারণ ঘটনা সে বোট ক্লাবে গিয়েও মদ পান করেছে, এবং নিয়ম বহিরভূত মদের বোতল হস্তগত করতে চাইলে বাক বিতন্ডতার সৃষ্টি হয়, হাতা হাতির ঘটনা ঘটতে পারে কিংবা চড় থাপ্পর এর ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনা অধিক বিশ্বাস যোগ্য। 

পরিমনি মেয়ে হয়ে গভির রাতে বারে যাওয়া নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথা হতে পারে। তবে মানুষরে যে প্রজাতি তার শরির এর পরতে পরতে স্পর্শ কাতর অংগ বিদ্যমান, তাদের সর্তক ভাবে চলাফেরা করতে হবে এটা বুঝতে বেশি চিন্তা করার দরকার নাই। ধরেন অনেক স্বর্নের গয়না পরে কেও রাতের আধারে রাস্তায় একা একা কোন এক বিপদ জনক রাস্তায় হাটছে, রাস্তার ছিনতাই কারী এসে স্বর্নের গয়ণা ছিনতাই করলো । তো এই গয়না ছিনতাই এর ঘটনায় আপনি কি বলবেন? এতো রাতে ওতো গয়না পরে কেন সে বাইড়ে গেল এ প্রশ্ন বেশির ভাগ লোকি করবে, এবং ভিক্টিমোলজি মতে এটা একটি ভিক্টিম সার্পোটেড ক্রাইম বলা যেতে পারে। 

পরিমনির ঘটনার  পরিস্থিতি বিচার, ভিডিও ফুটেজ  সহ নানা তথ্য বিশ্লেষনে  মনে হয়না তাকে হত্যার চেষ্টা ও ধর্ষন এর চেষ্টা করা হয়েছিল। বরং পরিমনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে কিংবা প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে সে নিজের নারীত্ব ও সৌন্দর্যর আশ্রয় নিয়ে একটি ভিন্ন ঘটনাকে নৃশংস ঘটনা হিসেবে বনর্না করেছে সবার সামনে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *