код

হিরো আলম কি দুর্ভিক্ষের খাবার ?

রুচীর কি আদৌ দুর্ভিক্ষ হয় ? নাকি অরুচি হয়, রুচীর পার্থক্য হয় ? শ্রদ্ধেয় মামুনুর রশিদ এর লেখা রুচির দুর্ভিক্ষে হিরো আলমের উত্থান পড়ে বিষয় টা নিয়ে ভাবছি । রুচীর দুর্ভিক্ষ কথাটা আমাদের কিংবদন্তী জয়নুল আবেদিনের, এবং এই বিষয়টা নিয়ে একটি দু:শ্চিন্তা ময় লেখা লিখেছেন আমাদের আরেক জীবন্ত কিংবদন্তী মামুনুর রশিদ ( যিনি নাট্য গুরুদেরও গুরু ) । যাদের শব্দচয়নের ভুল ধরার কোন প্রশ্নই উঠেনা, বরং ভাবার্থ নিয়ে চিন্তা করলে চিন্তাও সমৃদ্ধ হয়।

হিরো আলম আমার কাছে এক সাহসী যুবকের নাম । যিনি তার সীমাবদ্ধতাকে চ্যালেন্জ করেছেন এবং সফল হয়েছেন । তার সফলতার অন্যতম কারন তার ব্যাপক সমালোচনা, কিংবা তাকে ইগনোর করতে না পারা । তারা সমস্ত কনটেন্ট সম্ভবত কমেডি । হিরো আলম সিরিয়াস কোন কবিতা আবৃতি করলেও তা মানুষ কমিডি হিসেবে উপভোগ করে। রাজনীতিতে তার অংশগ্রহন, অন্যদের তিরস্কারের জবাব কিংবা সাংবাদিকদের মতামত প্রদানে তিনি অত্যন্ত পারদর্শিতার স্বাক্ষর রাখার ফলে ব্যক্তি হিরো আলোম কমিডি থেকে একটি সিরিয়াস ম্যাটারে পরিনত হচ্ছে ক্রমাগত ।

হিরো আলম আমার কাছে এক সাহসী যুবকের নাম । যিনি তার সীমাবদ্ধতাকে চ্যালেন্জ করেছেন এবং সফল হয়েছেন । তার সফলতার অন্যতম কারন তার ব্যাপক সমালোচনা, কিংবা তাকে ইগনোর করতে না পারা ।

এই কনটেন্ট এর জোয়ারে মোবাইল স্ক্রিনে স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ হাসির রোল পড়া এক অদ্ভুদ কনটেন্ট দেখে থেমে গিয়েছ দর্শক । কাল ছিপ ছিপে গড়নের, প্রমিত বাংলায় দুর্বল, উচ্চারনে দুর্বল সে নায়িকাদের সাথে নাচছে, টাইটানিকের ইংরেজি গান গাচ্ছে, কখনো হিন্দী কখনো রীবন্দ্র সংগীত গাচ্ছে , সব মিলিয়ে অনেক মশলা দেয়া বাসি পান্তাভাতের খিচুরী কনটেন্ট এর সন্ধান পেয় গেল দর্শক । হিরো জলিল ভাই, হিরো জায়েদ কাকা, নায়ক বাপ্পি ব্রো সহ আরো অনেকের কনটেন্টে যেখানে লবন কম সেখানে দর্শক খিচুরীর দিকে একটু বেশি মনোযোগ দিবে এটাই স্বাভাবিক ।

রুচি নিয়ে কালেক্টিভলি বা সমষ্টিগত ভাবে কোন প্রশ্ন থাকলেও তার আলোচনাগত কোন সমাধান নাই, সমাধান আসলে কনটেন্টেই । মিছিল করে সামালোচনা করে সুলতান সুলেমান কে তো আটকানো যায়নি । আমাদের এই দর্শকই বাকের ভাইর ফাসি আটকাতে মিছিল করেছে, সালমান শাহর মৃত্যুতে আত্মহত্য করেছে, নায়ক মান্নার মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েছে, আলিফ লায়লা দেখতে হুমরি খেয়ে পরেছে, মনপুরা দেখে কেদেছে, আয়রাবাজি দেখে হাত তালি দিয়েছে, সুলতান সুলেমান দেখার জন্য তারাতারি বাসায় এসছে, এভেন্জার দেখার জন্য সিনেপ্লেক্স এর টিকেট আগের দিনিই গায়েব করে দিয়েছে, পাঠান এর জন্য ওৎ পেতে থেকেছে ।

হিরো আলম কখনোই মোশারফ করিম, চঞ্চল চোধুরি, সাকিব খান, আফরান নিশো, অপুর্ব কিংবা জোবান সহ অনেক অনেক ভালো অভিনেতাদের প্রতিপক্ষ কিংবা সমকক্ষ না, সে এক অদ্ভুদ বাড়তি কনটেন্ট এর প্যাকেজ। কনটেন্ট এর জন্য হিরো আলমকে গ্রেফতার করে, সমালোচনা করে, তিরস্কার করে, কিংবা তাকে বাশ দিতে গিয়ে আমরাই তাকে এখন এতো উপরে তুলে ফেলেছি যে কোন বাশ আর হিরো আলম এর নাগাল পাচ্ছে না ।

ভালো ভালো কনটেন্ট এ ভরে উঠুক মিডিয়া ।


লেখক : মাসুদ করিম

ড্রিমমেকার অনলাইন ম্যাগাজিন
Latest posts by ড্রিমমেকার অনলাইন ম্যাগাজিন (see all)

৫ thoughts on “হিরো আলম কি দুর্ভিক্ষের খাবার ?

  1. হিরো আলম আসলেই হিরো। তার রূপ নাই, গুন নাই, শিক্ষা নাই তারপরও সে অদম্য। সে এখন সকল সমালোচনার উর্ধ্বে, এটাও তার তীব্র মানসিক শক্তির প্রমাণ। এটাই তার শক্তি এটাই তার গুন। আমার দৃষ্টিতে একটা গোষ্ঠীর কাছে তার জনপ্রিয়তা নেই কিন্তু বিশাল অপর একটা গ্রুপের কাছে তার ভীষণ জনপ্রিয়তা। গণতান্ত্রিক দেশে এই বিশাল গোষ্ঠীর সমর্থন কে উপেক্ষা করা যায় না। দেশে এরকম কোটি কোটি যুবক আছে। তারা তো এত হাইলাইটেড হতে পারছে না, হিরো আলম কোন কৌশলে পারছে? এটাও তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। কোন বেআইনি কাজ করা ছাড়াই সে নিজেকে কৌশলে বিখ্যাত করে নিচ্ছে, এটা তার প্রখর বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। না খেয়ে হিরো আলমের মত লাখ লাখ ছেলে পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায় , কেও তাকিয়ে দেখে না। অথচ হিরো আলম যেভাবেই হোক নিজের আর্থিক সামাজিক অবস্থান তৈরি করে নিচ্ছে, এটা প্রশংসার দাবি রাখে।
    পরিশেষে তাকে তার মত ছেড়ে দেওয়া উচিত। তাকে নিয়ে অযথা আলোচনা সমালোচনা না করলেই মনে হয় ভাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *