প্রত্যেকবার অপারেশন করার সময় আমি কৃতজ্ঞতা বোধ করি।

প্রত্যেকবার অপারেশন করার সময় আমি কৃতজ্ঞতা বোধ করি। সূক্ষ সমস্ত নার্ভ, ব্লাড ভেসেল, খালি চোখে দেখতে না পারা কোষ, কোলাজেন ফাইবার, হেয়ার ফলিকল স্তরে স্তরে সাজিয়ে বানানো এক অদ্ভুত রহস্য এই স্কিন কেটে আমি যখন পেটের ভিতরে যাই, নত হই আমি! কি রহস্য! কি ম্যাজেস্টিক ! কি অরূপ সৌন্দর্য !পেটের ভেতরে একেবারে গুছিয়ে রাখা সব! প্রত্যেকটা অর্গান নির্দিষ্ট করা একেক টা কাজের জন্য! এত ছোট কিডনি! তাতে লক্ষ লক্ষ মাইক্রোস্কোপিক ড্রেইনেজ সিস্টেম! একটার সাথে আরেকটার কত অসাধারন সংযোগ, মিলে মিশে কি অসাধারন এক অর্কেষ্ট্রা! আমার কাছে এই শরীর একটা গ্র‍্যান্ড ডিজাইন মনে হয়। এই যে খাচ্ছেন আপনি, মানে ফুয়েল নিচ্ছেন, তার শক্তি টুকু শরীরে রয়ে যাচ্ছে, বাকি টুক ফেলে দিচ্ছেন!

মো: মশিউর রহমান

হার্ট সারা জীবন ধরে ধুকপুক করে যাচ্ছে, সেই মাথা থেকে পা পর্যন্ত রক্ত নামের একটা অদ্ভুত তরল পদার্থ ঘুরে বেরাচ্ছে! লাংস অক্সিজেন ধরে রাখছে, চোখ আলো এনে ফেলছে মস্তিষ্কে! মাথার কোটি কোটি নিয়রন একটা আরেকটাকে ছুঁয়ে দিয়ে বলছে এইটাকে বলে ভাবনা, এইটা মন খারাপ, আর এইটাকে বলে ভালোবাসা! এ জিনিস এমনি এমনি হয় না।এই রহস্য এই সৌন্দর্য এই গ্র‍্যান্ড ডিজাইন হুট করে একটা মরু গ্রহে ম্যাজিকের মত শুন্য থেকে তৈরি হয় না! কেউ একজন, কোন না কোন এক জায়গায়, কোন না কোন ভাবে বানাতে হয়। প্রত্যেকবার পেটের গভীরে আমি তাকাই, শ্বাস প্রশ্বাসে লিভার এর উঠানামা দেখি, ইন্টেস্টাইনের গায়ে এসে লাগা সূক্ষ শীল্পকর্মের মত ব্লাড ভেসেল গুলো দেখি, আমি ক্ষুদ্র হই, নত হই, নরম হই! যে এই শরীর বানিয়েছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা,যে আমাকে বানিয়েছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা, যে আমার মত এক ক্ষুদ্র অস্তিত্ব কে এই অসাধারন শিল্পকর্মের গভীরে দেখার একটা সুযোগ করে দিচ্ছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা!”

সুতরাং তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?—–আল কোরান।

লেখক : মো: মশিউর রহমান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *