ফটোগ্রাফি কি ?
আমরা সাধারণত খালি চোখে সুন্দর বা অসুন্দর যা দেখতে পাই,সেই সময়ের স্মৃতিটা ধরে রাখার জন্য ক্যামেরার মাধ্যমে যে স্থিরচিত্রটি ফ্রেমবন্দি করে রাখি সেটাই ফটোগ্রাফি ।
ফটোগ্রাফি কেন করা হয় ?
আসলে ফটোগ্রাফিটা হচ্ছে মুল্যবান সময়ের স্মৃতিটাকে ধরে রাখার চেষ্টা,বা সুন্দর একটা দৃশ্য কে ধরে রাখার চেষ্টা যাতে সেই সুন্দরের আনন্দ সবাই নিতে পারে ।একটা ছবি/ফটোগ্রাফিকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে কি কি করনীয় ? ১। সুন্দর একটা দৃশ্য নির্বাচন বা সাবজেক্ট সিলেকশন,২। সঠিক ফ্রেমিং, ৩। বেসিক কিছু রুলস মানা, ৪। কম্পোজিশনের দিক নজর রাখা।
১। সুন্দর দৃশ্য নির্বাচন – ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে সাবজেক্ট সিলেকশন একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আমরা যা ইচ্ছা তুলে দিলেই সেটা ফটোগ্রাফি হবে না, তাই মাথায় রাখতে হবে আসলে আমরা কি তুলছি ক্যামেরায়,সেই দৃশ্যটা কেমন হবে ।সহজ কথা আপনার ছবির সাব্জেক্ট যত স্পষ্ট হবে, সবাই বলবে ফোকাস ভালো হয়েছে। মানে হলো, সাবজেকটের ওপর পুরো কনসেন্ট্রেশন থাকা। অনেক সময় দেখা যায় মোবাইলে ফুলের ছবি আমরা তুলি, কিন্তু কেমন যেনো ঘোলা ঘোলা হয় ফুলটা। এর মানে হলো, ফোকাস ঠিক হয় নাই। এক্ষেত্রে ক্যামেরা বার বার ঠিকমত পজিশন করে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে হবে কখন ক্যামেরার পর্দায় ছবিটাকে ক্লিয়ার/ শার্প দেখা যায়। তখনই তুলতে হবে। ফোকাস নিয়েও বই লেখা যায়। সো এই ৩ লাইন আপাতত এনাফ।
২। ফ্রেমিং – ছবির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ফ্রেমিং,একটা সাধারন ছবি হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ শুধুমাত্র সুন্দর ফ্রেমিং এর জন্য,আবার একটা অসাধারণ ছবিও সাধারন ওকে মানের হয়ে যেতে পারে ফ্রেমিং এর জন্য । তাই যাই তুলি আমি ক্যামেরার তার ফ্রেমিং অবশ্যই সুন্দর হতে হবে । ফ্রেমিং নিয়ে একটি পোষ্ট এর লিংক কমেন্ট বক্সে দেয়া আছ।আসুন জেনে নেই সাদা চোখে ফ্রেম বলতে কি বুঝি। ক্যামেরা (মোবাইল/এসএলআর/কমপ্যাক্ট) অন করার পর পর্দায় যতটুকু দেখা যায়, প্রাথমিকভাবে পুরোটাকেই ফ্রেম বলতে পারি। এই ফ্রেম জুম ইন/আউট করে বাড়াতে বা কমাতে পারেন। ছবি তোলার পর ক্রপ করেও কমাতে পারেন। ভালো ছবির গুন হলো ফ্রেম সোজা থাকবে।ফ্রেম নিয়ে এটুকুই থাক। কারন ফ্রেম বা ফ্রেমিং নিয়ে একটি বই লিখে ফেলা যায়।
৩। বেসিক কিছু রুলস মানা – একটা ভাল ফটোগ্রাফি তখনই অসাধারণ হবে যখন বেসিক কিছু রুলস মেনে তুলা হবে। যেমন- দিগন্তরেখা সোজা হতে হবে, রুলস অব থার্ড মানা, ফ্রেমে ডিস্টারবিং এলিমেন্টস না রাখা। রুলস অব থার্ড ফটোগ্রাফির একটি সর্বজন স্বীকৃত, সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত একটি নিয়ম। এর মানে হলো, আপনার ছবির সাবজেক্টকে পুরো ফ্রেমের তিন ভাগের যে কোন এক পাশে রাখা। ধরা যাক একটি ফুলের ছবি তুলবেন । ফুলের মুখটা বা দিকটা ঝুকে আছে বাম পাশের দিকে , সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন ফুল তাকে আপনার ফ্রেমের ডান পাশে যতটা চাপিয়ে রাখা যায়, এবং বাম পাশে যেনো মোটামুটি খালি জায়গা থাকে। তেমনি ডান দিকে ঝুকে থাকে কোন সাব্জেকেটের জন্য ডান পাশ ফাকা রাখবেন। আর যে ছবির সাব্জেক্টকে মাঝখানে রেখে তুলতেই হবে, ডানে বা বামে জায়গা নেই, সেখানে খেয়াল রাখবেন ছবি যেনো পুরো মাঝ বরাবর থাকে, এবং ডানে বা বায়ে এমন কোন অব্জেক্ট না আসে, যার উপর প্রথমেই চোখ চলে যায়।
৪। কম্পোজিশন এর দিকে নজর রাখা – একটা ফটোগ্রাফিক ফ্রেমের কম্পোজিশন ঠিক না থাকলে সেটা দেখতে ভাল লাগবে না কখনো, সাবজেক্ট এর
অবস্থান,ব্যাকগ্রাউন্ড,মোমেন্ট ও টোটাল পরিবেশ মিলিয়ে একটি সুন্দর কম্পোজিশনই ফটোগ্রাফিকে পারফেক্ট করে । ছবি তোলার সময় খেয়াল রাখুন ছবির দিগন্ত রেখা যেনো একদম সোজা থাকে। বাকা দিগন্ত রেখা ছবির গুনগত মান নষ্ট করে দেয় এবং চোখের জন্যও পীড়াদায়ক। এখানে দিগন্ত্ রেখা বলতে বোঝানো হয়েছে ছবি যেনো হরাইজন্টালি সোজা থাকে। একটি উদাহরণ দেই। ধরা যাক নদীর পাড়ে দাড়িয়ে আপনি ছবি তুলবেন নদী সহকারে ওপারের গ্রামের দৃশ্য । এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন আপনার ক্যামেরা বা মোবাইলে আড়াআড়ি ভাবে নদী্র রেখা যেনো পুরো সোজা থাকে। দুটি ছবি দিয়ে বাস্তব উদাহরণ দিলাম। দেখে নিন, দয়া করে।
লেখক :
১) আশকার ইবনে ফিরোজ । জেনারেল সেক্রেটারি পেন্সিল ফাউন্ডেশন।
Latest posts by ড্রিমমেকার অনলাইন ম্যাগাজিন (see all)
- শর্ত - নভেম্বর ৫, ২০২৪
- উন্মুক্ত দরপত্রের নিয়ম না মেনেই জাতীয় যুব দিবসের কাজ দিয়ে দিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক - অক্টোবর ২৫, ২০২৪
- স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খাদ্য: প্রত্যাশা’র সেইফ হেলথ কেয়ার প্রকল্পের লক্ষ্য ।
প্রত্যাশা’র নতুন উদ্যোগ: সেফ হেলথ কেয়ার প্রকল্প
- অক্টোবর ৯, ২০২৪