বঙ্গবাজারের লোকসান যেভাবে পুরোন করা সম্ভব

মাসুদ করিম

বঙ্গবাজারে আজ কিয়ামত নেমে এসেছে । ধাও ধাও লেলীহান আগুনের শিখা পুড়ে গেছে দোকান পাট, কাপড়ের স্তুপ, কোটি কোটি টাকার বান্ডেল। মাত্র একদিনের ব্যাবধানে অগনিত কোটিপতি ব্যাবসায়ি রাস্তার ফকির হয়ে গেছে । যারক্ষতি হয়েছে সে ছাড়া এর ভয়াভহতা আর কারো পক্ষে উপলব্ধি করা পুরোপুরি সম্ভব না । প্রশ্ন হলো এই ক্ষতি কি পুরোন করা সম্ভব ?

আমার উত্তোর সম্ভব । এটা আসলে নতুন চিন্তা এবং বড় চিন্তা বা বিগ থট । চট করে এ বিষয়ে বোঝা যাবে না । এক লোকের পনের লক্ষ টাকার ব্যান্ডেল পুরে ছাই হলো মানে তার সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক এর পনের লক্ষ নোট ও (চিহ্ন) পুড়ে ছাই হলো (যা কখনো রিকোভার করা যাবেনা)। এখন এই পুড়ে যাওয়া ছাই এর মূল্য পনের লক্ষ্য টাকা দিয়ে যদি রাষ্ট্র প্রতিস্থাপন করতে পারে তাহলে ক্ষতি পুষে যেতে পারে , কারন এই পনের লক্ষটাকার মালিক সে আসলেই ছিল । এটা করতে পারলে অর্থণীতির এক চরম যুগান্তকারী ‍সিদ্ধান্ত হবে । অতিরিক্ত নোট ছাপাতে হবে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে, স্বর্ন বা ডলারের বিপরিতে এই টাকা ছাপানো যাবেনা। এটা অবিশ্বাস্য হলেও সম্ভব । অর্থনীতি বিদ হলে হয়তো ভালোভাবে বুঝাতে পারতাম ।

১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় পাকিস্থান যখন সব ধংস করে দিয়েছিল, সব লুট করে নিয়ে গিয়েছিল তখন সেই যুদ্ধবিধস্ত দেশের অর্থ কিভাবে ছাপা হয়েছিল ?

১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় পাকিস্থান যখন সব ধংস করে দিয়েছিল, সব লুট করে নিয়ে গিয়েছিল তখন সেই যুদ্ধবিধস্ত দেশের অর্থ কিভাবে ছাপা হয়েছিল ? রাজশাহী থেকে ট্রেনে আসার সময় আমার এক বন্ধু এই প্রশ্ন আমাকে করেছিল । আমার সেই বন্ধু ইশতিয়াক আহমেদ তালুকদার যে সেই সময় সোনালী ব্যাংকে চাকুরি করতো বর্তমানে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে আছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি অবাক হয়ে জানতে চেয়েছিলাম আসলেইতো যুদ্ধ বিধস্ত দেশেল অর্থ ব্যবাস্থাপনায় প্রথম নোট কিভাবে ছাপা হোল ! কমল ( ইশতিয়াকের ডাক নাম ) আমাকে জানালো, শেখ মুজিব ছিল খুবি বুদ্ধিমান , এবং তার কনভিন্সিং পাওয়ার ছিল অসাধারণ, সেই যুদ্ধ বিধস্ত দেশের অর্থনীতির জন্য বঙ্গবন্ধু এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি আস্থার বিপরীতে টাকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন । মানে হলো সবার আস্থারাখতে হবে একটি নিদৃষ্ট পরিমান টাকা ব্যাংকে আছে । অনেকদিন আগের ঘটনা পুরাপুরি মনে নেই প্রায় দুই ঘন্টা আমরা এই বিষয় নিয়ে আলাপ করেছিলাম ।

সুতরাং সমগ্র ব্যাবসায়ীদের পুড়ে যাওয়া অর্থের বিপরীতে আস্থার ভিত্তিতে অতিরক্ত টাকা ছাপানো যেতে পারে । সহজ কথায় পুড়ে যাওয়া টাকার নোট পুনরায় ছাপিয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেয়া। এর ফলে অর্থনৈতিক বিরুপ প্রভাব পাওয়ার সম্ভাবনা নাই । ছেড়া টাকা যেমন মানুষ ব্যাংকে গিয়ে বদলাতে পারে ব্যপারটা ঠিক সেরকম ।

এই বিষয়ে আরেকটি ক্রিটিক্যাল চিন্তা হলো, যে ব্যবসায়ী কোটি টাকার প্যান্ট বানিয়ে বিদেশে ডেলিভারি দেবার অপেক্ষায় ছিল, তাদের সেই পুড়ে যাওয়া পন্যর বিপরিতে টাকা দিলে কি অর্থনীতে বিরুপ প্রভাব পরবে ? এই ক্ষেত্রে উত্তোর হলো পরবে । কারন একটি প্যান্ট বানানোর জন্য প্রস্তুকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ইতিমধ্যে তাদের সার্ভিস ফি বা সেবা মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে বা হবে । তাই অতিরক্ত টাকা পন্যের বিনিময়ে দিলে তা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অতিরক্ত টাকা হিসেবেই দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়ে সামন্য বা নিদৃষ্ট পরিমান ইনফ্ল্যাশনে ভুমিকা রাখবে । সেজন্য একই পন্যের দ্বিতীয় বার প্রস্তুত করে বিক্রয় মূল্যর সাথে যদি বাড়ানো হয় তাহলে কোন প্রভাব পরবনা । মানে যে প্যান্ট দেশে বা বিদেশে খুচড়া ক্রেতার নিকট একশ টাকা ছিল সে যদি সেটা এখন দুইশত টাকা দিয়ে কেনে তাহলে এ ক্ষতি কাটানো সম্ভব । অতিরক্ত মুল্য গ্রহনের জন্য “ এইড টু বাংলাবাজার “ ট্যাগ লাগানো থাকতে পারে ।

বঙ্গবাজারে নিস্ব হওয়া ব্যবসায়ীদের জন্য এলোমেলো দান কিংবা যেকোন ফিন্যানসিয়াল সাহায্য সাময়িক কাজে লাগবে তাদের বেচে থাকার জন্য । এতো কথা লিখে আমার মোটা দাগে প্রস্তাব হলো, এক ) বাংলাবাজারে দোকান ছিল তাদের গড় ক্ষতি হিসেবে নিদৃষ্ট পরিমান নোট বা টাকা ছাপিয়ে দেয়া যেতে পারে । সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহনের চুড়ান্তকারী ক্ষমতাবানদের আলোচানা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে । এটা মূলত রাষ্ট্রীয় ব্যাপার । দুই ) নিদৃষ্ট সময়ের জন্য রপ্তানী পোশাক পন্যে কমপক্ষে অর্ধশতাংশ মূল্য বৃদ্ধি করে রপ্তানী করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ( যাদের মাল ডেলিভারি দেবার কথা ছিল ) সাহায্য করা যেতে পারে । এটা সম্ভবত ব্যাবসায়িক সমিতির সিদ্ধান্তই যথেষ্ঠ ।

জানি কিছুই হবে না । বৃথা চিন্তা । তবু বিকেল থেকে এই চিন্তাই করলাম ।।

২২ thoughts on “বঙ্গবাজারের লোকসান যেভাবে পুরোন করা সম্ভব
মাসুদ করিম

  1. I want to express appreciation to you for rescuing me from this particular instance. As a result of looking out through the search engines and coming across thoughts which were not helpful, I assumed my life was over. Existing devoid of the answers to the issues you have sorted out by means of your entire report is a critical case, as well as ones which might have adversely affected my entire career if I had not discovered your web page. Your good skills and kindness in touching almost everything was very useful. I am not sure what I would’ve done if I had not discovered such a step like this. It’s possible to now look forward to my future. Thanks so much for the specialized and sensible guide. I won’t think twice to suggest the sites to any individual who wants and needs tips on this subject matter.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *